শনিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৪

ছোটদের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের

 চড়িভাতি

ছোটদের ছড়া-কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ফল ধরেছে বটের ডালে ডালে ;
অফুরন্ত আতিথ্যে তার সকালে বৈকালে
বনভোজনে পাখিরা সব আসছে ঝাঁকে ঝাঁক—
মাঠের ধারে আমার ছিল চড়িভাতির ডাক ।
যে যার আপন ভাঁড়ার থেকে যা পেল যেইখানে
মালমসলা নানারকম জুটিয়ে সবাই আনে ।
জাত-বেজাতের চালে ডালে মিশোল ক'রে শেষে
ডুমুরগাছের তলাটাতে মিলল সবাই এসে ।
বারে বারে ঘটি ভ'রে জল তুলে কেউ আনে ,
কেউ চলেছে কাঠের খোঁজে আমবাগানের পানে ।
হাঁসের ডিমের সন্ধানে কেউ গেল গাঁয়ের মাঝে ,
তিন কন্যা লেগে গেল রান্নাকরার কাজে ।
গাঁঠ-পাকানো শিকড়েতে মাথাটা তার থুয়ে
কেউ পড়ে যায় গল্পের বই জামের তলায় শুয়ে ।
সকল-কর্ম-ভোলা
দিনটা যেন ছুটির নৌকা বাঁধন-রশি-খোলা
চলে যাচ্ছে আপনি ভেসে সে কোন্‌ আঘাটায়
যথেচ্ছ ভাঁটায় ।
মানুষ যখন পাকা ক'রে প্রাচীর তোলে নাই
মাঠে বনে শৈলগুহায় যখন তাহার ঠাঁই ,
সেইদিনকার আল্‌গা-বিধির বাইরে-ঘোরা প্রাণ
মাঝে মাঝে রক্তে আজও লাগায় মন্ত্রগান ।
সেইদিনকার যথেচ্ছ-রস আস্বাদনের খোঁজে
মিলেছিলেম অবেলাতে অনিয়মের ভোজে ।
কারো কোনো স্বত্বদাবীর নেই যেখানে চিহ্ন ,
যেখানে এই ধরাতলের সহজ দাক্ষিণ্য ,
হালকা সাদা মেঘের নিচে পুরানো সেই ঘাসে ,
একটা দিনের পরিচিত আমবাগানের পাশে ,
মাঠের ধারে , অনভ্যাসের সেবার কাজে খেটে
কেমন ক'রে কয়টা প্রহর কোথায় গেল কেটে ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

জীবনানন্দ দাশের কষ্টের কবিতা জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতার নাম জীবনানন্দ দাশের কবিতার লাইন জীবনানন্দ দাশের রোমান্টিক কবিতা pdf জীবনানন্দ দাশের কবিতা ক্যাপশন জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতা বনলতা সেন

  সময়ের কাছে সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ’লে যেতে হয় কি কাজ করেছি আর কি কথা ভেবেছি। সেই সব একদিন হয়তো বা কোনো এক সমুদ্রের পারে আজকের প...